ভাগের মা গঙ্গা পায়
না
ভাগাভাগির ভিতরে বাঙালি হিসাবে আমাদের একটা বংশগত ঐতিহ্য বর্তমান। আর ভাগের সাথে বখরার একটা বিষয় জড়িয়েই থাকে। না, বখরা কথাটা শুনতে খারাপ। প্রধানত চোর জচ্চোর চিটিংবাজ ছ্যাঁচড়াদের সাথে বখরা কথাটা খাপ খায়। আজকাল অবশ্য, রাজনৈতিক ময়দানে নির্বাচিত প্রতিনিধি কেনাবেচার হাটের সাথেও বখরা কথাটি জড়িয়ে গিয়েছে। তাই আমরা ভদ্দরলোকেরা বখরা কথাটি মেনে নিতে রাজি নই। আমরা বলি ন্যায্য অধিকার। এই যেমন শীর্ষ আদালতের রায়ে কন্যা বিবাহিতই হোক আর অবিবাহিত। পৈতৃক সম্পত্তির অংশের ন্যায্য অধিকারী। তার অধিকার আইনত স্বীকৃত। আসলে সেটিও বখরা। এতদিন ভাইয়েরা বোনেদেরকে প্রাপ্য বখরা থেকে বঞ্চিত করতে পারতো। এবার থেকে আর পারবে না। অর্থাৎ বখরার ন্যায্য অধিকার পেতে গেলে। আগে তো ভাগ করতে হবে। ভাগ না করলে আর বখরা কিসের? তাই বলছিলাম। ভাগের সাথে বখরার জন্মজন্মাতরের সম্পর্ক। বখরা পেতে গেলে ভাগ না করে উপায় নাই। তাই পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ দিয়েই একান্নবর্তী পরিবারের ভাঙন শুরু হয়েছিল। আমাদের বাংলার সমাজ জীবনে। যে যার বখরা বুঝে নিতেই পরিবারে ভাঙন ধরানোর কাজটি শুরু হয়ে যায়। যে পৈতৃক সম্পত্তির লোভেই একান্নবর্তী পরিবারের ভাঙন, অনেক ক্ষেত্রেই সেই লোভ ভায়ে ভায়ে হানাহানি অব্দি গড়িয়েও থাকে। একটা পরিবারের ভিতরেই যদি এই অবস্থা হয়, তবে গোটা সমাজের চেহাড়াটি কি রকম হতে পারে, সহজেই অনুমেয়।